নবী রাসুলগণের দোয়া

নবী-রাসূলগণের দোয়া...


মহান আল্লাহ্ তায়ালা মানব
জাতিকে হেদায়াত করার জন্য
পবিত্র কোরআন নাযিল করেছেন।
এতে একদিকে যেমন তিনি স্রষ্টার
অস্তিত্ব ও একত্ব, সৃষ্টি ও সৃষ্টির
উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছেন তেমনি
ইবাদতের পদ্ধতি, মানুষের জন্য
কল্যাণকর ও অকল্যাণকর বিষয়সমূহ,
মানুষের ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-অনুতাপ,
পুরস্কার-প্রতিদান ইত্যাদি বিষয়
সম্পর্কেও উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ্র
সন্তুষ্টি অর্জন অথবা ভুল-ত্রুটি
মার্জনা, অথবা বিপদাপদ থেকে
পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য কীভাবে
তাঁকে ডাকতে হবে সে সম্পর্কে
কোরআনে দিক নির্দেশনা দেয়া
হয়েছে। নবী-রাসূল (আঃ) ও মুমিন
বান্দারা কীভাবে মহান আল্লাহ্র
কাছে দোয়া করতেন, তাঁর কাছে
কী কী বিষয় প্রার্থনা করতেন
পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে
সেসব বর্ণিত হয়েছে। নিচে এসব
আয়াতের মধ্য থেকে কয়েকটি
উল্লেখ করা হলো।
নবী-রাসূলগণের দোয়া :
নবী-রাসূলগণ মহান আল্লাহ্র কাছে
বিভিন্ন বিষয়ে প্রার্থনা করতেন।
ধর্ম প্রচারে সাহায্য করার জন্য,
কখনো কাফিরদের বিরুদ্ধে
সহযোগিতা কামনা করে, কখনো
নিজের জন্য, কখনো পিতা-মাতা,
কখনো আবার বংশধরদের জন্য নবী-
রাসূলগণ প্রার্থনা করতেন।

নিচেএমনই কিছু আয়াত উল্লেখ করা হলো...

১. নিজেদের বংশধারায় নবী
প্রেরণের জন্য মহান আল্লাহ্র কাছে
হযরত ইবরাহীম (আ.) ও হযরত ইসমাঈল
(আ.)-এর দোয়া :
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺗَﻘَﺒَّﻞْ ﻣِﻨَّﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻤِﻴْﻊُ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴْﻢُ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَ ﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ
ﻣُﺴْﻠِﻤَﻴْﻦِ ﻟَﻚَ ﻭَ ﻣِﻦْ ﺫُﺭِّﻳَّﺘِﻨَﺎ ﺃُﻣَّﺔً ﻣُﺴْﻠِﻤَﺔً ﻟَﻚَ ﻭَ ﺃَﺭِﻧَﺎ ﻣَﻨَﺎﺳِﻜَﻨَﺎ
ﻭَ ﺗُﺐْ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺏُ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴْﻢُ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَ ﺍﺑْﻌَﺚْ ﻓِﻴْﻬِﻢُ
ﺭَﺳُﻮْﻻً ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻳَﺘْﻠُﻮْﺍ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺁﻳَﺎﺗِﻚَ ﻭَ ﻳُﻌَﻠِّﻤُﻬُﻢُ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏَ ﻭَ
ﺍﻟْﺤِﻜْﻤَﺔَ ﻭَ ﻳُﺰَﻛِّﻴْﻬِﻢْ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺰِﻳْﺰُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴْﻢُ
…‘হে আমাদের প্রতিপালক!
আমাদের উভয়কে তোমার একান্ত
অনুগত কর এবং আমাদের বংশধর হতে
তোমার এক অনুগত উম্মত কর। আমাদের
ইবাদতের নিয়ম-পদ্ধতি দেখিয়ে
দাও এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল
হও। তুমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
‘হে আমাদের প্রতিপালক! তাদের
মধ্য থেকে তাদের নিকট এক রাসূল
প্রেরণ কর যে তোমার আয়াতসমূহ
তাদের নিকট তেলাওয়াত করবে;
তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা
দেবে এবং তাদেরকে পবিত্র
করবে। তুমি তো পরাক্রমশালী,
প্রজ্ঞাময়।’-(সূরা বাকারা : ১২৬)
২. পবিত্র মক্কা নগরী ও এর মুমীন
অধিবাসীদের জন্য হযরত ইবরাহীম
(আ.)-এর দোয়া :
ﺭَﺏِّ ﺍﺟْﻌَﻞْ ﻫﺬَﺍ ﺑَﻠَﺪﺍً ﺁﻣِﻨﺎً ﻭَ ﺍﺭْﺯُﻕْ ﺃَﻫْﻠَﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺜَّﻤَﺮَﺍﺕِ ﻣَﻦْ
ﺁﻣَﻦَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﺑِﺎﻟﻠﻪِ ﻭَ ﺍﻟْﻴَﻮْﻡِ ﺍﻟْﺂﺧِﺮِ
ক. …‘হে আমার প্রতিপালক! একে
নিরাপদ শহর কর, আর এর অধিবাসীদের
মধ্যে যারা আল্লাহ্ ও আখিরাতে
ঈমান আনে তাদেরকে ফলমূল হতে
জীবিকা প্রদান কর।’-(সূরা বাকারা
: ১২৬)
ﺭَﺏِّ ﺍﺟْﻌَﻞْ ﻫﺬَﺍ ﺍﻟْﺒَﻠَﺪَ ﺁﻣِﻨﺎً ﻭَ ﺍﺟْﻨُﺒْﻨِﻲْ ﻭَ ﺑَﻨِﻲَّ ﺃَﻥْ ﻧَﻌْﺒُﺪَ
ﺍﻟْﺄَﺻْﻨَﺎﻡَ ﺭَﺏِّ ﺇِﻧَّﻬُﻦَّ ﺃَﺿْﻠَﻠْﻦَ ﻛَﺜِﻴْﺮﺍً ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﻓَﻤَﻦْ ﺗَﺒِﻌَﻨِﻲْ
ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻣِﻨِّﻲْ ﻭَ ﻣَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻧِﻲْ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﻏُﻔُﻮْﺭٌ ﺭَﺣِﻴْﻢٌ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧِّﻲْ
ﺃَﺳْﻜَﻨْﺖُ ﻣِﻦَ ﺫُﺭِّﻳَّﺘِﻲْ ﺑِﻮَﺍﺩٍ ﻏَﻴْﺮِ ﺫِﻱْ ﺯَﺭْﻉٍ ﻋِﻨْﺪَ ﺑَﻴْﺘِﻚَ ﺍﻟْﻤُﺤَﺮَّﻡِ
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻟِﻴُﻘِﻴْﻤُﻮﺍ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓَ ﻓَﺎﺟْﻌَﻞْ ﺃَﻓْﺌِﺪَﺓً ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺗَﻬْﻮِﻱ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻢْ
ﻭَ ﺍﺭْﺯُﻗْﻬُﻢْ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺜَّﻤَﺮَﺍﺕِ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﻳَﺸْﻜُﺮُﻭْﻥَ
খ. …‘হে আমার প্রতিপালক! এ
নগরীকে নিরাপদ কর এবং আমাকে ও
আমার পুত্রদেরকে প্রতিমা পূজা
থেকে দূরে রাখ। ‘হে আমার
প্রতিপালক! এ সব প্রতিমা তো বহু
মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। সুতরাং
যে আমার অনুসরণ করবে সেই আমার
দলভুক্ত, কিন্তু কেউ আমার অবাধ্য
হলে তুমি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি
আমার বংশধরদের কতককে বসবাস
করালাম অনুর্বর উপত্যকায় তোমার
পবিত্র গৃহের নিকট, হে আমাদের
প্রতিপালক! এজন্য যে, তারা যেন
সালাত কায়েম করে। অতএব, তুমি
কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি
অনুরাগী করে দাও এবং ফলাদি
দ্বারা তাদের রিযিকের ব্যবস্থা
কর, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
করে।’-(সূরা ইবরাহীম : ৩৫-৩৮)
৩. নিজের জন্য এবং পিতামাতা ও
মুমিনদের জন্য ইবরাহীম (আ.)-এর
দোয়া
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْﻟِﻲْ ﻭَﻟِﻮَﺍﻟِﺪَﻱَّ ﻭَ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴْﻦَ ﻳَﻮْﻡَ ﻳَﻘُﻮْﻡُ ﺍﻟْﺤِﺴَﺎﺏُ
…‘হে আমার প্রতিপালক! যেদিন
হিসাব অনুষ্ঠিত হবে সেদিন
আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও
মুমিনদেরকে ক্ষমা কর।’-(সূরা
ইবরাহীম : ৪১)
হযরত ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর
অনুসারীদের দোয়া
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺗَﻮَﻛَّﻠْﻨَﺎ ﻭَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﺃَﻧَﺒْﻨَﺎ ﻭَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﺍﻟْﻤَﺼِﻴْﺮُ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻟَﺎ
ﺗَﺠْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻓِﺘْﻨَﺔً ﻟِﻠَّﺬِﻳْﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭْﺍ ﻭَ ﺍﻏْﻔِﺮْﻟَﻨَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﻌَﺰِﻳْﺰُ
ﺍﻟْﺤَﻜِﻴْﻢُ
…‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা
তোমারই ওপর নির্ভর করেছি,
তোমারই অভিমুখী হয়েছি এবং
প্রত্যাবর্তন তো তোমারই নিকট। ‘হে
আমাদের প্রতিপালক! তুমি
আমাদেরকে কাফিরদের পীড়নের
পাত্র কর না। হে আমাদের
প্রতিপালক! তুমি আমাদের ক্ষমা কর;
তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’-
(সূরা মুমতাহিনা : ৪-৫)
৪. সীমা লঙ্ঘন ও কাফির সম্প্রদায়ের
বিরুদ্ধে নবী-রাসূলগণের দোয়া :
সম্মানিত নবী-রাসূলগণ সীমা লঙ্ঘন
থেকে বেঁচে থাকার বিষয়ে এবং
কাফিরদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহ্র
কাছে এভাবে দোয়া প্রার্থণা
করতেন :
ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﻏْﻔِﺮْﻟَﻨَﺎ ﺫُﻧُﻮْﺑَﻨَﺎ ﻭَ ﺇِﺳْﺮَﺍﻓَﻨَﺎ ﻓِﻲْ ﺃَﻣْﺮِﻧَﺎ ﻭَ ﺛَﺒِّﺖْ ﺃَﻗْﺪَﺍﻣَﻨَﺎ ﻭَ
ﺍﻧْﺼُﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳْﻦَ
…‘হে আমাদের প্রতিপালক!
আমাদের পাপ এবং আমাদের
কাজে সীমা লঙ্ঘন তুমি ক্ষমা কর,
আমাদের পা সুদৃঢ় রাখ এবং কাফির
সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদের
সাহায্য কর।’-(সূরা আলে ইমরান : ১৪৭)
৫. হযরত নূহ (আ.)-এর দোয়া
ﺭَﺏِّ ﺇِﻧِّﻲْ ﺃَﻋُﻮْﺫُ ﺑِﻚَ ﺃَﻥْ ﺃَﺳْﺌَﻠَﻚَ ﻣَﺎ ﻟَﻴْﺲَ ﻟِﻲْ ﺑِﻪِ ﻋُﻠْﻢٌ ﻭَ ﺇِﻟَّﺎ
ﺗَﻐْﻔِﺮْﻟِﻲْ ﻭَ ﺗَﺮْﺣَﻤْﻨِﻲْ ﺃَﻛُﻦْ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳْﻦَ
…‘হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে
আমার জ্ঞান নেই, সে বিষয়ে
যাতে আপনাকে অনুরোধ না করি,
এজন্য আমি আপনার শরণাপন্ন হচ্ছি।
আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন
এবং আমাকে দয়া না করেন, তবে
আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব।’-
(সূরা হূদ : ৪৭)
৬. হযরত মূসা (আ.)-এর দোয়া :
ধর্ম প্রচারের কাজ সহজ করে দেয়া ও
সহোদর ভাই হযরত হারূন (আ.)-কে ধর্ম
প্রচারের ক্ষেত্রে সহযোগী করে
দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ্র কাছে
মূসা (আ.) নিচের প্রার্থনাটি
করেছিলেন :
… ﺭَﺏِّ ﺍﺷْﺮَﺡْ ﻟِﻲْ ﺻَﺪْﺭِﻱْ ﻭَ ﻳَﺴِّﺮْﻟِﻲْ ﺃَﻣْﺮِﻱْ ﻭَ ﺍﺣْﻠُﻞْ ﻋُﻘْﺪَﺓً
ﻣِﻦْ ﻟِﺴَﺎﻧِﻲْ ﻳَﻔْﻘَﻬُﻮْﺍ ﻗَﻮْﻟِﻲْ ﻭَ ﺍﺟْﻌَﻞْ ﻟِﻲْ ﻭَﺯِﻳْﺮﺍً ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻠِﻲْ
ﻫَﺎﺭُﻭْﻥَ ﺃَﺧِﻲْ ﺍﺷْﺪُﺩْ ﺑِﻪِ ﺃَﺯْﺭِﻱْ ﻭَ ﺃَﺷْﺮِﻛْﻪُ ﻓِﻲْ ﺃَﻣْﺮِﻱْ
…‘হে আমার প্রতিপালক! আমার বক্ষ
প্রশস্ত করে দাও এবং আমার কাজ সহজ
করে দাও। আমার জিহ্বার জড়তা দূর
করে দাও যাতে তারা আমার কথা
বুঝতে পারে। আমার জন্য আমার
স্বজনদের মধ্য থেকে একজন
সাহায্যকারী করে দাও আমার ভাই
হারূনকে, তার দ্বারা আমার শক্তি
সুদৃঢ় কর ও তাকে আমার কাজে অংশী
কর।’-(সূরা তা-হা : ২৫-৩২)
৭. হযরত ইউনুস (আ.)-এর দোয়া :
মাছের পেটে থাকা অবস্থায় ইউনুস
(আ.) এ দোয়া করেছিলেন :
… ﻟَﺎ ﺇِﻟﻪَ ﺇِﻟَّﺎ ﺃَﻧْﺖَ ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﺇِﻧِّﻲْ ﻛُﻨْﺖُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴْﻦَ
…‘তুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই; তুমি
পবিত্র, মহান! আমি তো সীমা
লঙ্ঘনকারী।’ (সূরা আম্বিয়া : ৮৭)
মুমিন বান্দাদের দোয়া :
পবিত্র কোরআনে মুমিন বান্দাদের
বৈশিষ্ট্য বর্ণনার পাশাপাশি
তাদের দোয়া করার বিষয়টিও
বর্ণিত হয়েছে। তাদের দোয়া হলো
নিম্নরূপ :
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻟَﺎ ﺗُﺆَﺍﺧِﺬْﻧَﺎ ﺇِﻥْ ﻧَﺴِﻴْﻨَﺎ ﺃَﻭْ ﺃَﺧْﻄَﺄْﻧَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَ ﻟَﺎ ﺗَﺤْﻤِﻞْ
ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺇِﺻْﺮًﺍ ﻛَﻤَﺎ ﺣَﻤَﻠْﺘَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﻣِﻦْ ﻗَﺒْﻠِﻨَﺎ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَ ﻟَﺎ
ﺗُﺤَﻤِّﻠْﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻃَﺎﻗَﺔَ ﻟَﻨَﺎ ﺑِﻪِ ﻭَﺍﻋْﻒُ ﻋَﻨَّﺎ ﻭَ ﺍﻏْﻔِﺮْﻟَﻨَﺎ ﻭَ ﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺎ
ﺃَﻧْﺖَ ﻣَﻮْﻟَﺎﻧَﺎ ﻓَﺎﻧْﺼُﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳْﻦَ
…‘হে আমাদের প্রতিপালক যদি
আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে
তুমি আমাদেরকে পাকড়াও কর না।
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের
পূর্ববর্তিদের ওপর যেমন গুরুদায়িত্ব
অর্পণ করেছিলে আমাদের ওপর তেমন
দায়িত্ব অর্পণ কর না। হে আমাদের
প্রতিপালক! এমন ভার আমাদের ওপর
অর্পণ কর না যা বহন করার শক্তি
আমাদের নেই। আমাদের পাপ মোচন
কর, আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের
প্রতি দয়া কর, তুমিই আমাদের
অভিভাবক। সুতরাং কাফির
সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে
সাহায্য কর।’-(সূরা বাকারা : ২৮৬)
বোধশক্তিসম্পন্ন (জ্ঞানী)
ব্যক্তিদের দোয়া :
পবিত্র কোরআনে বোধশক্তিসম্পন্ন
ব্যক্তিদের দোয়া সম্পর্কে বর্ণিত
হয়েছে যে, তারা বলে :
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْﻟَﻨَﺎ ﺫُﻧُﻮْﺑَﻨَﺎ ﻭَ ﻛَﻔِّﺮْ ﻋَﻨَّﺎ ﺳَﻴِّﺂﺗِﻨَﺎ ﻭَ ﺗَﻮَﻓَّﻨَﺎ ﻣَﻊَ
ﺍﻟْﺄَﺑْﺮَﺍﺭِ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻭَﻋَﺪْﺗَﻨَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﺳُﻠِﻚَ ﻭَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﺰِﻧَﺎ ﻳَﻮْﻡَ
ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺇِﻧَّﻚَ ﻟَﺎ ﺗُﺨْﻠِﻒُ ﺍﻟْﻤِﻴْﻌَﺎﺩَ
১. …‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি
আমাদের পাপ ক্ষমা কর, আমাদের মন্দ
কাজগুলো দূরীভূত কর এবং
আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের
সহগামী করে মৃত্যু দিও। হে আমাদের
প্রতিপালক! তোমার রাসূলগণের
মাধ্যমে আমাদেরকে যা দিতে
প্রতিশ্রুতি দিয়েছ তা আমাদেরকে
দাও এবং কিয়ামতের দিন
আমাদেরকে হেয় কর না। নিশ্চয়ই
তুমি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম কর না।’-
(সূরা আলে ইমরান : ১৯১-১৯৪)
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْﻟَﻨَﺎ ﻭَ ﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺎ ﻭَ ﺃَﻧْﺖَ ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟﺮَّﺍﺣِﻤِﻴْﻦَ
২. …‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা
ঈমান এনেছি, তুমি আমাদেরকে
ক্ষমা কর ও দয়া কর, তুমি তো সর্বশ্রেষ্ঠ
দয়ালু।’ (সূরা মুমিনূন : ১০৯)
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺍﺻْﺮِﻑْ ﻋَﻨَّﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﻋَﺬَﺍﺑَﻬَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻏَﺮَﺍﻣﺎً
৩. …‘হে আমাদের প্রতিপালক!
আমাদের থেকে জাহান্নামের
শাস্তি বিদূরিত কর, তার শাস্তি
তো নিশ্চিত বিনাশ, নিশ্চয়ই তা
অস্থায়ী ও স্থায়ী আবাস হিসাবে
নিকৃষ্ট।’-(সূরা ফুরকান : ৬৩-৬৬)
হযরত মূসা (আ.)-এর সময় যাদুকরদের
দোয়া :
মূসা (আ.)-এর মোকাবিলায় ফিরআউন
যাদুকরদের নিয়ে আসে। যাদুকররা
মূসা (আ.)-এর মুজেযার কাছে
পরাজিত হয়ে ঈমান আনে। এতে
ফিরআউন ক্ষিপ্ত হয়ে যাদুকরদের
হত্যা করার নির্দেশ দেয়। এরপরও
যাদুকররা ঈমান ত্যাগ করেনি, বরং
মহান আল্লাহ্র কাছে তাদের
প্রার্থনা ছিল :
… ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺃَﻓْﺮِﻍْ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺻَﺒْﺮﺍً ﻭَ ﺗَﻮَﻓَّﻨَﺎ ﻣُﺴْﻠِﻤِﻴْﻦَ
…‘হে আমাদের প্রতিপালক!
আমাদেরকে ধৈর্য দান কর এবং
মুসলমানরূপে আমাদেরকে মৃত্যু দাও।’-
(সূরা আরাফ : ১২৬)

No comments: